কম্পিউটার হ্যাং হলে করণীয়ঃ

আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করি সবাই হ্যাং শব্দটির সাথে পরিচিত। পিসি হ্যাং করলে বেশ কিছুক্ষন কাজ বন্ধ থাকে। অনেক সময় আবার রিস্টার্ট না দেওয়া পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক হয়না। আর এমন মানুষের সংখ্যা অনেক কম যারা কম্পিউটার হ্যাং সমস্যার সম্মুখীন হননি। কমবেশি সব কম্পিউটার ব্যবহারকারীই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। 

কী কী কারণে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে?

কম্পিউটার অনেক কারনেই হ্যাং (Hang)হতে পারে। যেমনঃ

**একাধিক প্রোগ্রাম রান করাঃ

কম্পিউটার হ্যাং হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো কম্পিউটারে একাধিক প্রোগ্রাম ওপেন করা। মনে রাখতে হবে সবসময় একাধিক প্রোগ্রাম ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও কম্পিউটারের র‌্যাম কম থাকলে কম্পিউটার হ্যাং করবে।

আর সবসময় টাস্ক ম্যানেজার দেখে নিতে হবে যে কতগুলো প্রোগ্রাম চালু আছে ,প্রয়োজনীয় ছাড়া বাকি অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম গুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

**পুরোনো অপারেটিং সিস্টেম ধীর্ঘদিন ব্যবহার করাঃ

একটি অপারেটিং সিস্টেম দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারনে পিসি হ্যাং করতে পারে। সুতরাং, অপারেটিং সিস্টেম এর দিকেও নজর দিতে হবে পিসি হ্যাং রোধে। প্রতি ৩  (তিন) মাস পর পর অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করতে হবে।

**ব্রাউজার অনেক ভারী হয়ে থাকলেঃ

ইন্টারনেট ব্যবহার আমরা সবাই করি যারা কম্পিউটার ব্যবহার করি। আর আমরা ইন্টারনেট যে ব্রাউজারে ব্যবহার করি, যা কিছু ভিজিট করি এই ব্রাউজার তার সব কিছু ক্যাচ (cache) করে রাখে।

এইভাবে একটা সময় ব্রাউজার অনেক ফাইল ক্যাচ (cache)করে রাখে। ফলে ব্রাউজার অনেক ভারী হয়ে যায় এবং পিসি হ্যাং করে। তাই ১৫ দিন অন্তর বা একটা নির্দিস্ট টাইম পর পর ব্রাউজারের ক্যাচ (cache)ক্লিয়ার করতে হবে।

** ভারী সফটওয়্যার ডাউনলোডঃ

ইন্টারনেট থেকে কোনো সফটওয়্যার ডাউনলোড এর আগে ভালো করে জেনে নিতে হবে যে এটা ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস মুক্ত। ভারী ও ভাইরাসযুক্ত সফটওয়্যার ডাউনলোডের ফলে পিসি হ্যাং করতে পারে।

তাই সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা কম্পিউটারে ভাইরাস থাকার কারণে পিসি হ্যাং করে।

Computer Hang Problem Solution

**হার্ডডিস্কের সমস্যার জন্যঃ

পুরোনো হার্ডডিস্কের কারণেও পিসি হ্যাং করতে পারে। কেননা হার্ডডিস্ক পুরোনো হয়ে গেলে অনেক সময় প্রোগ্রাম রিড করতে পারে না। ফলে পিসি হ্যাং করে। তাই যদি হার্ডডিস্ক অনেক পুরাতন হয়ে যায় এবং এটির জন্য যদি পিসি হ্যাং করে তাহলে হার্ডডিস্ক পরিবর্তন করতে হবে।

** র‌্যাম সমস্যার জন্যঃ

র‌্যামের মেমরি কম হলে, র‌্যাম লুজ হয়ে গেলে,  যখন রেম তার নূন্যতম স্পেস দিয়ে সবগুলো প্রোগ্রাম কে ঠিকমতো কাভারেজ দিতে না পারে ঠিক তথনি রেম এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পিসি হ্যাং করে।

** ইউ.এস.বি সিকিউরিটির জন্যঃ

কম্পিউটারে সবসময় ইউ.এস.বি সিকিউরিটি বজায় রাখতে হবে। বিভিন্ন বা যেখান সেখান থেকে পেনড্রাইভ এনে কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে না। বিভিন্ন মানুষের কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস থাকে। তাই এ সকল পেনড্রাইভ ব্যবহারের ফলে নিজেদের কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে। অনেক সময় এ ধরনের পেনড্রাইভ লাগানোর সাথে সাথে পিসি হ্যাং করে। তাই হ্যাং রোধে আমাদের ইউ.এস.বি সিকিউরিটি ব্যবহার করতে হবে।

**ভাইরাস বা ম্যালওয়ারঃ

ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার এর কারনেও পিসি হ্যাং করে। কেননা ভাইরাস কম্পিউটার সিস্টেমে খুব দ্রুত প্রবেশ করে এবং সিস্টেম বা প্রোগ্রামে বাঁধা প্রদান করে জায়গা দখল করে। তাই কম্পিউটার সিস্টেমকে ভাইরাসমুক্ত রাখতে হবে। এজন্য একটি আপডেটেড এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।

**প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি স্টোরেজে পর্যাপ্ত স্পেস না থাকাঃ

কম্পিউটারের লোকাল ডিস্ক বা সি ড্রাইভে পর্যাপ্ত স্পেস না থাকলে পিসি হ্যাং করে। তাই লোকাল ডিস্ক বা সি ড্রাইভে যেখানে অপারেটিং সেটাপ দেয়া আছে সেই ড্রাইভে মিনিমাম ৮ জিবি ফ্রি স্পেস রাখতে হবে। সম্ভব হলে আর একটু বেশিও রাখতে পারেন হ্যাং রোধে।

**হ্যাং থেকে পরিত্রাণের উপায়ঃ

  • কম্পিউটার একটানা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ৩-৪ ঘন্টা পর পর রিস্টার্ট দেয়া ভালো।
  • পিসিকে ক্লিন রাখতে যেকোনো ক্লিনার সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • কম্পিউটারের লোকাল ডিস্কে বা সি ড্রাইভে মিনিমাম ১০ জিবি ফ্রি স্পেস রাখতে হবে।
  • ব্যবহারযোগ্য ভারী সফটওয়্যার গুলো কাজ শেষে আনইন্সটল করা উচিত।
  • একসঙ্গে একাধিক প্রোগ্রাম বা ব্রাউজারে একাধিক ট্যাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • র‌্যাম অপটিমাইজার এবং ক্লিনার সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • প্রতি চার মাস পর অপারেটিং সিস্টেম বা উইন্ডোজ আপডেট করা প্রয়োজন।
  • একটানা ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবহার করার পর পিসিকে রিস্টার্ট দিয়ে নিলে ভালো হয়।
  • একটানা ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবহার করার পর পিসিকে একবার রিস্টার্ট দিয়ে নিলে ভালো হয়।
  • পিসিতে কমান্ড প্রেস করার পর রেসপন্সের জন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। রেসপন্স আসার আগে যদি বার বার কমান্ড প্রেস করা হয় তাহলে পিসি হ্যাং হতে পারে।

এছাড়াও উপরের কোন বিষয় যদি বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে প্রশ্ন করতে পারেন এবং পরবর্তীতে কী বিষয় নিয়ে আর্টিকেল চান তা আমাদেরকে জানাতে পারেন।আর লেখাটি পড়ে আপনি যদি একটু হলেও উপকৃত হন, তাহলে দয়া করে শেয়ার করবেন।