ক্যাম্পাস , বিশ্ববিদ্যালয়, গেমিং জোন, ঘরে বা বিজনেসপ্লেসে ওয়াইফাই সুবিধার জন্য ইন্টারনেট কানেকশনের পাশাপাশি প্রয়োজন ভালোমানের রাউটার। বেশিরভাগ গ্রাহকই না জেনে বুঝে, অন্যের কথার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে এই ডিভাইসটি কিনে থাকে।


রাউটার কেনার আগে আপনাকে যে সকল বিষয় মাথায় রেখে এটি কিনতে হবে, তার সকল ইনফরমেশন বা তথ্য এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হলোঃ-


রাউটার স্ট্যান্ডার্ডঃ রাউটারটি কোন ধরনের স্ট্যান্ডার্ড বেজে তৈরি তা ডিভাইসটির ম্যানুয়াল বা প্যাকেটে সূচিত করা থাকে। সাধারণত নেটওয়ার্ক ডিভাইসে  IEEE 802.11b,g,n; IEEE 802.3,3u; IEEE 802.11ac; 802.11n ইত্যাদি সহ বেশ কয়েক ধরনের স্ট্যান্ডার্ড উল্লেখ করা থাকে।  IEEE 802.11ac স্ট্যান্ডার্ড রাউটার বেশ সাপোর্ট দেয়। তবে IEEE 802.11n স্ট্যান্ডার্ডের রাউটারগুলো বর্তমানে আরো ভাল পারফরম্যান্স প্রদান করে থাকে।

মূল্যঃ গ্রাহকদের বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে রাউটার কিনতে হয়। যার অন্যতম আর একটি বিশেষ দিক হলো প্রোডাক্টের মূল্য। কেননা বাজেটও একটি বড় ফ্যাক্টর।  তাই স্ট্রিমিংয়ের ধরণ, ডিভাইস কানেক্টের পরিমাণ বা ইউজার সংখ্যা এবং  কাভারেজ রেঞ্জ বুঝে রাউটার কিনতে হয়। ব্র্যান্ডভেদে রাউটারের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। তাই গ্রাহককে রাউটার কেনার পূর্বে অবশ্যই এর সঠিক মূল্য জেনে নেওয়া উচিত।

পোর্টাবিলিটিঃ কিছু কিছু রাউটার আছে যেগুলোতে মোবাইলের সিম ব্যবহার করা যায়। যেটা পকেট রাউটার নামে পরিচিত সবার কাছে। এ ধরণের ডিভাইসগুলোতে থাকে রিচার্জেবল ব্যাটারি। আর এই রিচার্জেবল ব্যাটারিকে চার্জ দিয়েও ঘরের বাইরে ব্যবহার করা যায়।

সিকিউরিটিঃ বর্তমান সময়ে খুব পরিচিত একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাকাউন্ট কিংবা আইডি হ্যাকিং। আনপ্রটেক্টেড বা অরক্ষিত নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে হ্যাকাররা খুব সহজেই তথ্য হাতিয়ে নেয় কিংবা গ্রাহককে খুবই বিপদের সম্মুখে ফেলে দেয়।

এজন্য এমন রাউটার বেছে নেয়া উচিৎ যেগুলো আইডি, ডিভাইস অ্যাকাউন্ট সুরক্ষা প্রদান করতে আবশ্যিক ভূমিকা পালন করবে।

সিঙ্গেল ব্যান্ড নাকি ডুয়েল ব্যান্ডঃ রাউটার প্রধানত ২টি ভিন্ন ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। আর সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার সাধারণত 2.4GHz অথবা 5GHz এর যেকোনো একটিকে সমর্থন করে। অপরদিকে  ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার  2.4GHz 5GHz উভয় ব্যান্ডই সমর্থন করে থাকে।

তাই ভালোমানের নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি পাওয়ার জন্য যেকোনো একটিকে বেছে নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা, ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইস একেক ধরনের ব্যান্ডে কানেক্ট হয়। যেমন ল্যাপটপ স্মার্টফোন 5GHz ব্যান্ডে সংযুক্ত বা কানেক্ট হয়। আর অন্যান্য ডিভাইসগুলো 2.4GHz 5GHz উভয় ব্যান্ডে কানেক্ট হতে পারে।

এখন হয়তো আপনি কনফিউশনে আছেন তাহলে কোন রাউটারটি আমার জন্য বেস্ট হবে, সিঙ্গেল ব্যান্ড নাকি ডুয়েল ব্যান্ড। একটি বিষয় মাথায় রাখবেন আপনি কোন ব্যান্ডের রাউটার ব্যবহার করবেন সেটা আপনার আশেপাশের এনভায়রনমেন্টের উপর নির্ভর করবে। আপনার বাসা যদি খুবই ঘনবসতি এলাকায় বসবাস করেন, তাহলে ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার আপনার জন্য বেস্ট হবে। এটি আপনাকে খুবই ভালো স্পিড প্রদান করবে। আর যদি আপনার হাই স্পিড নেট কানেকশনের প্রয়োজন না হয়, তবে আপনি সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটার ব্যবহার করতে পারেন।

সুতরাং, নেটওয়ার্ক কাভারেজের উপর ভিত্তি করে আপনি যেকোনো একটি ব্যান্ড খুব সহজেই বাছাই করতে পারেন।

ইউজার/কানেক্টিভিটি সংখ্যাঃ কতজন ইউজার এই নেটওয়ার্কের আন্ডারে সংযুক্ত থাকবে এটা মাথায়ে রেখে আপনাকে রাউটার নির্বাচন করতে হবে। কেননা ইউজার বেশি হলে আর রাউটার লো কোয়ালিটির হলে আপনি ভালো পারফরমেন্স পাবেন না। তাই রাউটার নির্বাচনে আপনাকে এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।

লাইফস্প্যানঃ লাইফস্প্যান হলো রাউটারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের ডিভাইসগুলোকে কানেক্টেড রাখতে রাউটারকে ২৪ ঘন্টায় সার্ভিস প্রদান করতে হয়। আর ওভারটাইমিং ওয়ার্কিং ওভারলোডের কারণে রাউটারের পারফরমেন্স দিন দিন হ্রাস পেতে থাকে।

তাই রাউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক লাইফস্প্যান সমৃদ্ধ রাউটার বেছে নেয়া উচিৎ। তবে এক্ষেত্রে রাউটার এর দাম একটু বেশি হয়।

নেটওয়ার্ক রেঞ্জঃ প্রতিটি রাউটারের একটি নির্দিস্ট কাভারেজ এরিয়া থাকে। তাই রাউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনার অফিস বা বাসার কতটুকু এরিয়া জুড়ে আপনি কাভারেজ চান, তার উপর ভিত্তি করে আপনার কাঙ্খিত রাউটারটি বাছাই করুন। সর্বোপরি আপনাকে যে বিষয়টার দিকে ফোকাস করতে হবে সেটি হলো, আপনার প্রয়োজনীয়তা,কাভারেজ এরিয়া, ইউজার সংখ্যা ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা পূর্বক রাউটার বাছাই করুন।